ইসলাম এবং প্রোডাক্টিভিটি ! The Productive Muslim . Part 2

ইসলাম এবং প্রোডাক্টিভিটি ! The Productive Muslim . Part 2

 



ইসলাম এবং প্রোডাক্টিভিটি


ইসলামিক প্রোডাক্টিভিটি আগে বুজতে হলে, আমাদেরকে বর্তমান মর্ডান সাইন্স প্রোডাক্টিভিটি আগে বুজতে হবে। এখানে আমি ক্ষুদ্র করে, এই বিষয়ে আলোচনা করেছি!...

আমাদের আজকের এই মর্ডান প্রোডাক্টিভিটি তৈরি হয়েছে পশ্চিমা সংস্কৃতির দার্শনিকত্বত্ত ভিত্তির উপর।
এবং আমরা যদি উক্ত বিষয়টি খুব ডিপলি বুজতে পারি তাহলে এখানে স্পষ্ট, আমাদের আজকের এই মর্ডান সাইন্সের প্রোডাক্টিভিটি কেবল দর্শন এর উপর ভিত্তি করে তৈরি।
সহজ কথায়, যা প্রমান করা যায় না, তার অস্তিত্ব নেই।

এবং আমাদের মূল সমস্যাটা এখানেই, বিশেষ করে মুসলিমদের!

আমরা এই ওয়েস্টার্ন প্রোডাক্টিভিটি অনুসরণ করতে গিয়ে আমাদের ইসলামিক দৃষ্টিকোণ হারিয়ে ফেলেছি। ইসলামের পথে আমাদের বেঁচে থাকার উদ্দেশ্য দিনদিন আমরা হারিয়ে ফেলতেছি।

তাহলে, ইসলামিক দৃষ্টিকোণ হতে প্রোডাক্টিভিটি কি?

ইসলামী প্রডাক্টিভিটির উপর ২ টা মূল ভিত্তি দাড় করানো যায়। এবং এটার শাখা প্রশাখাই মূলত একটি বিস্তর আলোচনার অংশ!

১. উদ্দেশ্য মূলক প্রোডাক্টিভিটি
২. ভ্যালু ড্রিভেন প্রোডাক্টিভিটি

# ইসলামিক দৃষ্টিকোণ হতে, উদ্দেশ্য মূলক প্রোডাক্টিভিটি র মূল অংশ হলো,

আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য কি? আমাদের উদ্দেশ্য কি? আমার কাজের উদ্দেশ্যে কি? আমরা যদি আমাদের আজকের সমাজের দিকে একটু গভীরভাবে লক্ষ্য করি তবে এটা পরিষ্কার যে, আমাদের ম্যাক্সিমাম লোকজনের তেমন গঠন মূলক কোন উদ্দেশ্য নেই! নেই তার কাজের কোন গঠনমূলক উদ্দেশ্য কিংবা তার জীবনের!..

যেখানে ইসলামে এই ভিত্তির উপর আমাদের জীবনের দুটি উদ্দেশ্য দাড়ায়!

১. আল্লাহর গোলামি করা
২. একজন ব্যাক্তিত্ববান মানুষ হিসেবে পৃথিবীতে নিজের অস্তিত্ব রক্ষা করা/রেখে যাওয়া

এখানে এই বিষয়টা স্পষ্ট, আল্লাহর গোলামি করা মানেই আপনাকে সারা সময় তার ইবাদতে থাকতে হবে এমনটা নয়,

আপনাকে যেমন আদ্ধ্যাতিক ভাবে আল্লাহর ইবাদত করতে হবে, তেমনি দুনিয়ার কাজেও আপনাকে সেরকম ইফোর্ট দিতে হবে।

# ভ্যালু ড্রিভেন প্রোডাক্টিভিটি অনেকভাবেই আলোচনা করা যেতে পারে, যেহেতু আমি ক্ষুদ্র আকারে এই বইয়ের প্রতিটি চ্যাপ্টার আলোচনা করবো তাই, এখানেই একটি ছোট গল্পের মাধ্যমে উক্ত বিষয়টি আলোচনা করতে চাই!

খলিফা উমর বিন আব্দুল আজিজ, একদিন এক পর্যটকের সাথে এক সন্ধায় দেখা করেন, এবং উক্ত সাক্ষাতকার এ, তিনি তৎকালিন ইসলামিক স্টেইট এবং আরো বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করছিলেন, তো আলোচনার এক পর্যায়ে তারা তাদের নিজেদের লাইফের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে যখন আলোচনা শুরু করলেন, তখন খলিফা আজিজ তার মোমবাতিটি নিভিয়ে ফেলেন।
এবং উক্ত আলোচনা কন্টিনিউ করতে বলেন।

তার এরকম আচরনে, পর্যটক তাকে প্রশ্ন করলেন তিনি এমনটা কেন করলেন?

তিনি উত্তরে বললেন, আমি এখানে আমার স্টেইটের রাজস্ব থেকে আয়কৃত টাকা দিয়ে মোমবাতি ক্রয় করে আলোচনার জন্য বসেছি। কিন্তু যখনি বিষয়টা আমাদের নিজেদের জীবনের আলোচনায় আসলো, তখন আমার কোন অধিকার ছিলনা, সরকারি টাকা পুড়িয়ে নিজেদের লাইফ নিয়ে আলোচনা করার!... কারন আমি আমার কোষাগারের টাকা এভাবে অপচয় করতে পারিনা!..

ভ্যালু ড্রিভেন বা কোন বিষয়ের মূল্য বিবেচনা করা নিজ থেকেই আসে. এটা বাহিরের থেকে কখনো কেউ আপনার ভিতরে পুশ করতে পারবে না। আপনার ইচ্ছাশক্তি এবং আপনার নৈতিকতার উপর ভিত্তি করেই এই ভ্যালু ড্রিভেন প্রোডাক্টিভিটি তৈরি হয়।

এছাড়া এই চ্যাপ্টারে আরো বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ মিথ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে যা যুগের পর যুগ ধরে চলে আসছে,

যেমন
১. আমাদের এই দুনিয়া পরিত্যাগ করা উচিত। কোনমতে আল্লাহর পথে চলে দুনিয়াটা শেষ করা উচিত।

যা কোনভাবেই ইসলামের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

২. দোয়া করলে সব ঠিক হয়ে যাবে!

এটাও আমাদের যুগ যুগ ধরে চলে আসা একটা বড় ভুল ধারনা

৩. খারাপ সময় আসলে ধৈর্য ধরে বসে থাকো!
এটাও একটি ভুল ধারনা

৪. সব কিছু পৃর্ব লিখিত!

এযাবত কালের সব থেকে বেশি মিশকনসেপশন এই বিষয়গুলোর উপর তৈরি হয়েছে। আর মূলত এসব কারনেই আজ মুসলমানরা ডিপ্রেশনে রয়েছে, বেকার রয়েছে , অশিক্ষিত রয়েছে।

কারন তারা চেষ্টা করে না, তারা মনে করে দোয়া করলেই সব ঠিক হয়ে যাবে, তাদের চাকরি হয়ে যাবে, তারা শিক্ষিত হয়ে যাবে।

তারা মনে করে, এই দুনিয়া আমাদের জন্য নয়, ইহুদিরা মজা করুক, আমাদের জন্য পরকাল রয়েছে।

অথচ তারা ,আমরা মুসলিমরা ভুলে যাই এটা আমাদের অনুশীলনের জায়গা। অথচ আমরা অলস হয়ে পড়ে থাকি।
আমরা মনে করি, কঠিন সময় আসলে চুপচাপ বসে থাকা,যেখানে চেষ্টার কোন বালাই নেই ,চুপচাপ বসে থাকাকে খোদার উপর বিশ্বাস রাখাকে বুঝি।

আবার আমরা মনে করি, সব কিছু পূর্ব লিখিত। তাই আমার কপালে যা আছে তাই হবে।

অথচ আল্লাহ বলেছেন, চেষ্টা করতে, কাজ করতে, পরিশ্রম করতে,জ্ঞান অর্জন করতে।

যেখানে আজ আমরা পুরোপুরি উল্টো!... এবং পশ্চিমাদের এবং শয়তানের ধোকাবাজিতে পড়ে, আমাদের দুনিয়ায় আমাদের দ্বারা শ্রেষ্ট কিছু হওয়ার মতো, আমাদের নিজেদের পটেনশিয়াল নিজেরাই হারাচ্ছি!....

~ চ্যাপ্টার ২ ( দি প্রোডাকক্টিভ মুসলিম )
Previous Post Next Post